শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৩ পূর্বাহ্ন
বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) সংবাদদাতা : পর্যটন এখন একটি শিল্প,যা অনেক দেশের অর্থনীতির একটি প্রধান উপাদান। ইতিমধ্যে এ শিল্প বিশ্বব্যাপী একটি দ্রুত বিকাশমান খাত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্ঠি ছাড়াও বহুমাত্রিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে পর্যটন খাত বর্তমানে অনেক দেশেরই শীর্ষ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী শিল্পে পরিণত হয়েছে। তেমনি করে পর্যটন ক্ষেত্রের অপার সম্ভাবনাময় ইতিহাস-ঐতিহ্যের লালন ভূমি ও প্রাকৃতি সৌন্দর্যে ভরপুর বানিয়াচং। এ উপজেলায় রয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম গ্রাম বানিয়াচং। আরও রয়েছে ঐতিহাসিক কমলারাণীর সাগরদীঘি, প্রায় ৬শ বছরের প্রাচীন বিথঙ্গলের আখড়া, লক্ষীবাওর জলাবন ও হাজার বছরের প্রাচীন মসজিদসহ নানা পুরাকীর্তি।
এসব দর্শনীয় স্থানসমুহে সারবছরই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা দর্শনার্থীদের ভীড় লেগে থাকে। কিন্তু চমৎকার একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার মতো সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত এখানে গড়ে উঠেনি পর্যটন কেন্দ্রের কোনো ধরনের সুযোগ-সুবিধা। উপেক্ষিত রয়ে গেছে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দেয়া প্রতিশ্রুতি। অথচ একটু যতœ নিয়ে দর্শনীয় স্থানগুলোকে পর্যটন শিল্পে কাজে লাগানে গেলে বানিয়াচং তথা পুরো উপজেলার চিত্র পাল্টে যেত। আর এখান থেকে সরকার ও পেতো কোটি টাকার রাজস্ব।
“বানিয়াচং পর্যটন শিল্প বিকাশের দাবিতে উন্নয়ন ও সম্ভাবনা” শীর্ষক আলোচন সভার আয়োজন করেন বানিয়াচং প্রেসক্লাব। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় উপজেলা কৃষি অফিস মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বানিয়াচং প্রেসক্লাব সভাপতি হেমায়েত আলী খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল রেজা সোহেলের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তাগন উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। বক্তারা আরও বলেন, ১৯৯৭ সালে তৎকালিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক সাগরদিঘিকে পর্যটন করার ঘোষনা দিলেও দীর্ঘ ২২ বছরেও বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা বাস্তবায়নে মাননীয় পর্যটন মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন নেতৃবৃন্দ।
বানিয়াচং প্রেসক্লাব আয়োজিত পর্যটন উন্নয়ন ও সম্ভাবনা শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন যুগ্ম জেলা জজ মোঃ শামছুদ্দীন মাসুম, জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এডভোকেট মনসুর উদ্দিন আহমেদ ইকবাল, সাংবাদিক রুহুল হাসান শরীফ, কবি তাহমিনা বেগম গিনি, বাপা হবিগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল, জনাব আলী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ সাফিউজ্জামান খান,আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার দাশ, আমবাগান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক বিপুল ভূষন রায়, জার্মান প্রবাসী দেওয়ান সালমা রাজা ও মেধবিকাশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভানু চন্দ্র চন্দ।
বক্তরা আরো বলেন-পর্যটনের অপার সম্ভাবনাময় আর ইতিহাস-ঐতিহ্যের লালন ভূমি ও প্রাকৃতিক সৌন্দয্যে ভরপুর এই বানিয়াচং। এই গ্রামটি কর্তৃপক্ষের যথাযথ হস্তক্ষেপে হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের এক অপরুপ পর্যটন স্থানে এবং কোলাহলে মুখরিত হতে পারে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আগমনে। শুধু যে বানিয়াচং গ্রামের নামটি দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে যাবে তাই নয়,এখান থেকে সরকারও তাদের বিপুল অংকের রাজস্ব পেত।
আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাব সদস্য-আব্দুল হক মামুন,মখলিছ মিয়া,কোষাধ্যক্ষ আশিকুল ইসলাম, সাংবাদিক জীবন আহমেদ লিটন ও বড়বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির কোষাধ্যক্ষ সহিদুর রহমান প্রমুখ। আলোচনা সভায় প্রেসক্লাবের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।